আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনার নতুন ধরন নিয়ে সতর্ক করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) ইউরোপীয় অঞ্চলের প্রধান হ্যান্স ক্লুগ বলেছেন, ইউরোপে ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধি এ অঞ্চলের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেবে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি আরেকটি ঝড় আসছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ওমিক্রন এ অঞ্চলের আরও অনেক দেশে আধিপত্য বিস্তার করবে। এরই মধ্যে দুর্বল হয়ে পড়া স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে আরও কিনারায় ঠেলে দেবে।’
মঙ্গলবার ভিয়েনায় এক সংবাদ সম্মেলনে হ্যান্স ক্লুগ বলেন, ‘করোনার নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের কারণে হাসপাতালগুলো ভরে উঠতে পারে। স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেবাগুলো হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। ইউরোপের দেশগুলোর সরকার ও কর্তৃপক্ষকে এখনই এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।’
ইউরোপে এরই মধ্যে কয়েকটি দেশ নতুন ধরন নিয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। জার্মানি অনুষ্ঠান সংক্ষেপ করাসহ বড়দিন পরবর্তী নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এদিকে, পর্তুগাল ২৬ ডিসেম্বর থেকে পানশালা ও নাইটক্লাবগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত হোম অফিস বাধ্যতামূলক করেছে। একই সঙ্গে ১০ জনের বেশি জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে দেশটি।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বড়দিনের আগে নতুন কোনো বিধিনিষেধ না দিলেও স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডে সামাজিক মেলামেশার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।
সুইডেনে পানশালা, ক্যাফে ও রেস্তোরাঁগুলো বুধবার থেকে বসে খাওয়া বা সেবা নেওয়া যাবে না এবং সব ধরনের কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী লিনা হেলেনগ্রেন ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়ায় সতর্ক করে বলেছেন, এর কারণে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ওপর বোঝা বাড়ছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎ বলেছেন, ২৮ ডিসেম্বর থেকে নাইটক্লাবগুলো বন্ধ থাকবে এবং ব্যক্তিগত জমায়েত ১০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি সেই দিন থেকে ফুটবল ম্যাচগুলোও দর্শক ছাড়া অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া দেশটির জনস্বাস্থ্য সংস্থা কঠোর সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার সুপারিশ করেছে। নেদারল্যান্ডসেও ডাচ সরকার সোমবার থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে।
গত মাসে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনায় নতুন এই ধরন শনাক্ত হয় এবং তারপর বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় অঞ্চলের ৫৩টি দেশের মধ্যে অন্তত ৩৮টি দেশে এরই মধ্যে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। বিশেষ করে রাশিয়া ও তুরস্কে এই ধরন নিয়ে সতর্ক করেছে ডাব্লিউএইচও।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের তথ্য অনুযায়ী, এ অঞ্চলে এরই মধ্যে ৮৯ মিলিয়ন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং এতে মৃত্যু হয়েছে দেড় মিলিয়নেরও বেশি মানুষের।